ভারতের পলাতক শীর্ষসন্ত্রাসী দাউদ ইব্রাহিম কি তাহলে পাকিস্তানেই আশ্রয় নিয়ে আছেন? এই বিতর্কটি নতুন করে সামনে এসেছে। কারণ খোদ পাকিস্তান সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে বলা হচ্ছে, সে দেশে দাউদের তিনটি বাড়ি আছে। পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে এমন খবর দিয়েছে ভারতের গণমাধ্যমগুলো।
এনডিটিভি বলছে, ডন জানিয়েছে, করাচির অভিজাত এলাকা ক্লিফটনে সৌদি মসজিদের কাছে ‘হোয়াইট হাউজ’ নামে একটি বাড়িকেই দাউদের ঠিকানা হিসেবে চিহ্নিত করেছে পাকিস্তান প্রশাসন। করাচির ডিফেন্স হাউজিং অথরিটির ৩০ নম্বর সড়কের ৩৭ নম্বর বাড়ি এবং নুরবাদে পাহাড়ি এলাকায় প্রাসাদোপম বাড়িও রয়েছে তার। ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ ভারতে সবচেয়ে বড় নাশকতা ঘটে। সেদিন মুম্বাইয়ের বেশ কয়েকটি জায়গায় ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যার মূলহোতা হিসেবে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিমের নাম উঠে আসে।
ভারত মনে করে, মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া দাউদ পাকিস্তানেই লুকিয়ে আছেন। যদিও বরাবরের মতোই পাকিস্তান এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে আসছিল।
২০০৩ সালে দাউদ ইব্রাহিমকে ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা দেয় ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই দাউদ ইব্রাহিমকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ পলাতক ‘মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী’র তালিকায় রেখেছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মূলত আন্তর্জাতিক চাপ, বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে আর্থিক অপরাধ রুখতে নীতি তৈরি ও কার্যকর করে যে সংস্থা, সেই ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) চাপের কারণেই দাউদের বিষয়টি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানকে ২০১৮ সালে ধূসর দেশের তালিকায় রাখে এফএটিএফ। ব্যক্তি ও সংগঠন মিলিয়ে মোট ৮৮টি নাম এফএটিএফকে জানিয়ে পাকিস্তান দাবি করেছে, এদের আর্থিক লেনদেনে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
১৮ আগস্ট পাকিস্তান সরকার একটি নির্দেশিকায় বলেছে, দাউদ ছাড়াও জামাত-উদ-দাওয়া প্রধান হাফিজ সাঈদ, জইশ-ই-মুহাম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার এবং আল-কায়দার ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এদের গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখা হয়েছে। কড়াকড়ি বেড়েছে পাক তালিবানের ওপরও।
গত ৫ জুন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সস্ত্রীক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দাউদ ইব্রাহিম। ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও কূটনীতির জাল এখন পর্যন্ত দাউদ ইব্রাহিকে ছুঁতে না পারলেও করোনা ভাইরাস তাকে কাঁবু করেছে। তার স্ত্রী মেহজাবিনও আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। পাশাপাশি এই মাফিয়া ডনের ব্যক্তিগত এক দেহরক্ষী এবং একজন কর্মীও ভাইরাসটির থাবায় পড়েছেন। যদিও পাকিস্তান সরকার এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
Leave a Reply